নোয়াখালীর দুটি উপজেলা থেকে একজন অটোরিকশাচালক ও একজন গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা দুজনই আত্মহত্য করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
রোববার রাত ১১টায় সেনবাগ উপজেলা থেকে পুলিশ সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. পলাশের মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে একইদিন সন্ধ্যায় উপজেলার ছাতার পাইয়া ইউনিয়নের পলতীমঙ্গল গ্রামের পশ্চিমপাড়ার হাশেম মিয়ার বাড়িতে পারিবারিক কলহের জেরে তিনি স্ত্রীর ওপর অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানান। সে একই এলাকার নোয়াব আলীর ছেলে।
থানা সূত্রে জানা যায়, পলাশ পেশায় একজন অটোরিকশার চালক। পারিবারিক কলহের জেরে তার স্ত্রী কিছুদিন আগে বাবার বাড়িতে চলে যান। এক পর্যায়ে তিনি স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এই নিয়ে স্ত্রীর ওপর অভিমান করে রোববার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের অগোচরে পলাশ বসতঘরের একটি কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
সেনবাগ থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরো জানান, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। সোমবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
অপরদিকে, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলার চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রাজ্জাকপুর গ্রামের বেপারীবাড়িতে থেকে পুলিশ কোহিনুর আক্তার নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। সে একই বাড়ির ইয়াকুব হোসেন মোহনের স্ত্রী। পারিবারিক কলহের জেরে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছে। তবে কোহিনুরের স্বজনদের অভিযোগ তার স্বামী মোহন তাকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামীকে আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোহিনুর আক্তার দুই সন্তানের জননী ছিল। শাশুড়ির সঙ্গে তার প্রায় ঝগড়া হতো। শাশুড়ির সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তিনি যৌথ পরিবার থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার জন্য স্বামীকে চাপ দেন। কিন্তু স্বামী তার মায়ের থেকে পৃথক হতে অসম্মতি জানান।
একপর্যায়ে রোববার রাত ১০টার দিকে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন কোহিনুর। পরে তার স্বামী বাজার থেকে এসে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাটখিল থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামীকে আটক করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের স্বজনদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।